২৮ ডিসেম্বর, ২০১২

নাগরিক রাত...


                        

অনুচ্চারিত কিছু কথা খোঁজে রাত
            বালিশে চাদরে পিষে যায় ভালোবাসা।
বেওয়ারিশ ঘুম স্বপ্নের হাতে হাত
            সেনসেক্স বোঝে নাগরিক উচ্চাশা।
যে নগর ছিল হরপ্পা প্রস্তরে
            যে নগরে নারী ব্রহ্মা পদ্মাসনা।
সে নগরে আজ রাত নামে অগোচরে
            নীল সে নগর বারোয়ারী বিবসনা।
তবু চোরাবালী, আলো প্রত্যাশী সে
            ধীরে সে আঁধার চীরে সে অগ্রগামী
রাত ভাঙা চাঁদ চুঁয়েছে কার্ণিশে
            পথ হারা ঘুম,স্বপ্নের চেয়েও দামী।
একাকী নগর বিলোয় ঘুম নিয়নে
            জ্যোৎস্নার সাথে সহবাসে লীন চাঁদ।
সিলিং এ নিঝুম মৃত্যুর দ্যুত জানে
            তমশা চাদরে হতাশার সংবাদ।
অনুচ্চারিত সেই কথা খোঁজে আজও
                        জীবন প্রাচীরে মৃত্যু শ্যাওলা রাত... 

এলোমেলো...



                              
                                  
 শহর ফিরছে ট্রাম,বাস ,মেট্রোতে
শহর ফিরছে নেশা লাল মায়াবিনী
ঘরে ভালোবাসা উপচে পড়েছে ফ্রিজে
শহর ফিরছে আরো আরো প্রেম কিনে।
       আমি একা হাঁটি-একা কই?আছে চাঁদও।
       কানে headphone গুজে জীবনের মানে
       ভালোলাগে যেই মেঘ ভেঙে তুমি কাঁদো
       আজও কাঁদো নাকি ভুল করে সেইখানে?
সেইখানে মানে যেখানে বৃষ্টি এলে
ইষ্টিকুটুম মেলে দিত তার ডানা
ভাবের আবেগে কত কথা গেলে ব’লে
আজও বেপরোয়া সময় মানে না মানা
       শহর ফিরেছে-নিঃঝুম কোলকাতা
       শহর ফিরেছে-ক্লান্তির নীল চোখে
       যন্ত্রণা সয়ে আজও ম’রে বেঁচে থাকা
       শহর ফিরেছে-ফিরে পাইনি তো ওকে!

একগোছা রজনী গন্ধা



তুই আসলেতে এমনই ছিলিস
আমি ভুল করে ভুল করেছি-তোকে অন্যরকম ভেবেছি
আর ভুল ভাঙাবার সেই মহান দায়টা তুই নিজেই নিয়েছিলিস
আমি বুঝে গেছি সেই প্রস্তরে যুগ থেকে
(তুই)  আসলে এমনই ছিলিস

তোর আচলে ঝিনুক ছিল
আমি ঝিনুকের কাটা ঘায়ে-হাসিতে অবলীলায়
সে ক্ষতের দাগে মজেছি-আমি তাতে উল্লাস খুজেছি
আর বুক ফাটা বিদ্রুপে-মাঝরাতে নিশ্চুপে সে ক্ষতে প্রলেপ বুলেছি
তোর আচলের ঝিনুকের দাগ-আমি গ্লিসারিনে ধুয়ে ফেলেছি

তোর বেপরোয়া বুকের কাছে-কিছু মরে যাওয়া বটের পাতায়
আমি প্রত্যাশা লিখেছিলাম- নীল নিয়নের নীল কবিতায়
আজ খসে যাওয়া সে পাতার জাল-কিছু আলটুসি কিছু জঞ্জাল
কিছু এলোমেলে পাগলামী আর
কিছু কাহারবা কিছু ঝাপতাল
আমি খুড়ে খুড়ে দেখেছি সবই-তোর মনের গভীর বিল খাল।
তুই শূন্য শূন্য শুধু তুই-
তুই একরাশ ফাঁকা বাষ্পই-
তুই রঙ পেন্সিলের রানী- তোর শরীরে অশরীরি ছাল
তোর বেপরোয়া বুকের ভাজে-আজ সভ্যতা বড় বেসামাল

শুধু লজ্জা লজ্জা টুকু থাক-তোর লজ্জাই স্মৃতি হয়ে থাক
ছেড়া বুকপকেটের এক ফাঁক-তোর জন্য বরাদ্দ থাক
তোর লিপস্টীকে রাত ভোর হোক-আর পেন্সিল হাতে থেকে যাক
শুধু লজ্জা লজ্জা টুকু থাক-থাক চোখে –ঠোঁটা-বুকে লেগে থাক।
তবু খুশি, কাল তোর হয়ে রাত
কেটেছিল সুন্দর, হঠাৎ
আজ ছন্দে পড়ল সোম যেই
আমার বুঝতে যে আর বাকি নেই
সব রূপকথা সব সপ্নেই-তুই সাঁঝবাতি সাজিয়েই থাক
তোর হৃদয়হীনাএই প্রেম-আজ আমাকে চিনিয়ে দিল রাত।

রাত গুন গুন ঘুম পাড়ানি
বলে (তুই) আসলে ছিলিস এমনই

আমার কলম...


 আমার কলম সৃষ্টি সুখের পাখি
আমার কলম হাট্টিমা টিম টিম
আমার কলম অঙ্ক ক্লাসে ফাঁকি-
          হাফ-ইয়ার্লি আস্ত ঘোড়ার ডিম।।

আমার কলম কালবোশেখি ঝড়ে
আমার কলম গা ছমছম নেশা
আমার কলম সুর্যাস্তের পরে
          ঘুমপাড়ানী মাসি পিসির পেশা।।

আমার কলম মাঝ বয়সী চাঁদে
আমার কলম অধর ছোঁওয়া হাসি
আমার কলম বিপজ্জনক খাদে
          নিষিদ্ধ নীল সপ্ন পাশাপাশি।।

আমার কলম মৃত্যু ছবি আঁকে
আমার কলম বৃহন্নলার স্নায়ু
আমার কলম বুকপকেটের ফাঁকে
          মধ্যবিত্ত ক্ষয়িষ্ণু পরমায়ু।।

আমার কলম বেজায় শান্ত ছেলে
আমার কলম সিক্ত দখিন হাওয়া
আমার কলম এমনি এমনি খেলে
          বাধ্য তোমার সপ্ন ডিঙা বাওয়া।।

আমার কলম আমার অভিনয়
আমার কলম আমার পায়ের ছাপ
আমার কলম অহঙ্কারের ভয়ে
          কৃষ্ণকলির তৃষ্ণার উত্তাপ।।

আমার কলম অজয় নদীর বাণে
আমার কলম রবীন্দ্রনাথে পায়
আমার কলম ভালোবাসতে জানে
          মৃণাল এবং সত্যজীৎ রায়।।

আমার কলম ঋদ্ধ প্রতিবাদে
আমার কলম কঠোর কঠিন প্রাণ
আমার কলম বিভৎস উন্মাদে
          গীটার হাতে জীবন মুখী গান।।

তবুও আমার কলম জুড়ে আলো
আমার কলম শীরায় উপশিরায়
তবুও আমার কলম বাসে ভালো
আমার কলম বাংলায় গান গায়।।

৫ ডিসেম্বর, ২০১২

টুকরো



বৃষ্টি,তোমাকে ছুঁতে চাই-
        স্বপ্নের অঙ্গুলীহেলনে,
নিঃশব্দ বিষণ্ণতার দুর্লব্ধ অবচেতনায়।
হারিয়ে যাওয়া লাল মেঠো পথের একাকীনী কান্নায়।
        তোমার স্পর্শ আমায়
                          মুগ্ধ করুক

৪ ডিসেম্বর, ২০১২

প্রেম...


আজ কলম আমার প্রেমের দেবতা ভারে
চুম্বন হোক শিশির শিউলি ভোর
হিম ঝড়ে যাক আলটুসি নদী পাড়ে
লেগে থাক নীল স্বপ্নের বালুচর

নিকোটিন থাক তর্জনী অঙ্গুলে
বিভাজিকা হোক তরঙ্গ সঙ্কুল
অধরে ওষ্ঠে বেপরোয়া পথ ভুলে
ঝড়ে যাক পথে আনমনা নীম ফুল

কিছু কথা নয় কালবৈশাখী হোল
কিছু পথ হারা আজন্ম উন্মাদ
আমি রূপকথা আঁকি কোনে দেখা আলো
বিনি সুতি মালা নক্সী কাথার মাঠ

বহুমাত্রিক জ্যামিতিক মহাকাশে
আগুণে সেজেছে হৃদয়বিদারক
ফুটপাথ ভরা নাগরিক ছাইপাশে
তোমার গ্রীবায় নতুন সকাল হোক...

২ ডিসেম্বর, ২০১২

পরকিয়া...


একপশলা হালকা হাওয়া তোমার নরম চুলে
আলগা চুমু আজলা ভরে পিছলে পথ ভুলে
আমার তখন ঘুম জড়ানো চাদর জুড়ে রাত,
ভালোলাগার ভালোবাসায় ভাসান পথঘাট।
লেকের জলে ঢেউএর দোকান ট্রাফিক আলো লাল
তোমার তখন সন্ধ্যা আঁচল নিয়ন ভেজা গাল।
পথ হারানো পথিক আলো, বুক ভরানো সুখে-
নরম উপত্যকার ভাজে হারায় উন্মুখে।
শহর তখন বাসের টিকিট-ট্রামের ছেড়া তারে
ব্যস্ত ঘড়ির কাঁটার ফাঁকে ব্যর্থ নমস্কারে।
আমিই একা ক্লান্ত পথিক তার সে রূপের রসে
হাজরা থেকে এলাম ফাঁড়ি –উলটো দিকে বসে
...হায় জানতে পারল না সে!